ওয়েবডেস্ক, কথাবার্তা, দাবিরুল ও ইনজামাম, বেলডাঙা, ২৭ আগস্টঃ মুর্শিদাবাদের কথাশিল্পী, বাংলা ও বাংলার বাইরে যার আধিপত্য। কবিতা দিয়ে শুরু যার লেখালেখি। হঠাৎ করেই গদ্যে বিচরণ। সেটা নব্বই দশকে। তিনি হলেন মুর্শিদাবাদের অন্যতম কথাকার রাজকুমার শেখ। মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা থানার মাঝপাড়া গ্রামে বাসিন্দা রাজকুমার শেখের জন্ম একটা সাধারণ পরিবারে। দারিদ্রতার মধ্য দিয়ে জীবনযাপন। আশির দশকের শেষাশেষি তিনি কবিতা লেখতে শুরু করেন। প্রথম কবিতা প্রকাশ পাই হরেকনগর এ এম ইন্সটিটিউট স্কুল ম্যাগাজিনে। তারপর জেলা তথা জেলার বাইরে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় তিনি নিয়মিত ভাবে লেখতে শুরু করেন। তাঁর প্রথম ছোটগল্প প্রকাশ পাই 'আজকের প্রহরী' পত্রিকার শারদীয়া সংখ্যায়। পরে তিনি উপন্যাস লিখতে শুরু করেন। প্রথম উপন্যাস নব্বই দশকে 'বনমালী পুরের চিঠি' ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হয় 'লটারী সংবাদ'এর সাহিত্য পাতায়। তারপর একের পর এক উপন্যাস বের হতে থাকে - শারদীয়া দৈনিক ত্রিপুরা দর্পণ পত্রিকা 'লালমোহর' (২০১৬), 'আটপ্রহর' (২০১৭), 'অন্তর কথা' (২০১৮), 'বৃষ্টির পরে' (২০১৯); উৎসবের 'আরম্ভ' পত্রিকা 'পোড়ামাটির গন্ধ' (২০১৭); 'খোলা চিঠির' শারদীয়া সংখ্যার 'স্বপ্ন' পত্রিকাতে 'ডোলা বিবি' (২০১৭), 'ঝুম বৃষ্টি' (২০১৯); এছাড়াও ত্রিপুরার অন্যপ্রিয় কাগজে প্রকাশিত হয় 'নীল জলের ঢেউ' (২০১৮), ও 'নোনা ঢেউ' (২০১৯)। উপন্যাস ছাড়াও তাঁর ১০০ টির বেশি ছোটগল্প বাংলা, ত্রিপুরা ও আসামের জনপ্রিয় পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর লেখায় বারবার উঠে এসেছে সাধারণ জনজীবনের কথা, নদীর কথা, জেলেদের কথা, ভাঙন মানুষের কথা। আজও তিনি খুঁজে বেড়ান সেইসব হারিয়ে যাওয়া মানুষদের। তাঁর 'লালমোহর' উপন্যাসে উঠে এসেছে বাংলা শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজদৌলার কথা। বাংলার পঞ্চায়েত রাজের জ্বলন্ত রাজনীতিকে তুলে ধরেছেন তাঁর 'পোড়া মাটির গন্ধ' উপন্যাসে। এই উপন্যাসে তাজদ্দিন চরিত্রটি বাংলা সাহিত্যের এক অভিনব সৃষ্টি। তাঁর আর এক জীবন ভাঙনের উপন্যাস 'নোনা ঢেউ'। এখানে ফুটে উঠেছে বিপন্ন জেলে জীবনের কথা।
শত বাধাবিপত্তিকে অতিক্রম করে রাজকুমার শেখের কলম যেন মানব সমাজের এক প্রতিফলিত দর্পণ। তিনি মুর্শিদাবাদ তথা বাংলার মানুষের গৌরব। তাঁর লেখনী ধারা বাংলা সাহিত্যকে উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি করে চলেছে।



No comments:
Post a Comment