ছেলেগুলোর অধিকাংশই দেখতে কুৎসিত দর্শন। গায়ের রঙ কালো, শারীরিক কাঠামো তালপাতার সেপাই, চেহারার কোনো ছিরি নেই। এই চেহারার রোমিওরা এখন বাইক চড়ে বেলডাঙ্গা শহরের আনাচে কানাচে ঘুরছে। আরও আছে, এরা যে বাইকে ঘোরে তার ওজন ওদের নিজের ওজনের প্রায় তিন-চার গুণ। অর্থাৎ মোটর সাইকেলটি যদি কোনো কারণে মাটিতে পড়ে যায়, তবে তা তুলে সোজা করার শারীরিক ক্ষমতাও এদের নেই। এইসব রোমিওরা স্কুল-কলেজ শুরু বা বসার সময় মেয়েদের উত্যক্ত করতে ভালোবাসে। ‘উত্যক্ত’ এই কারণে, রোমিওগুলো ওইসব মেয়েদের ‘প্রেম’ পেতে আগ্রহী। কিন্তু সুন্দরীদের তো এইসব নায়দের প্রতি মন নেই। তাদের স্বপ্নের রাজপুত্র আলাদা। তাই তারা বিরক্তই হয়। কিন্তু রোমিওদের চেষ্টার অন্ত নেই। তারা ঠিক স্কুলের সময় বাইক নিয়ে মেয়েদের সাইকেলের পাশে দাঁড়ায়। কিংবা মেয়েদের গা ঘেঁষে হুশ করে ঝড়ের গতিতে মোটর বাইক চালায়। ফাঁকা রাস্তা পেলে কোনো কোনো সময় মেয়েদের গায়ে হাত দেওয়ারও চেষ্টা করে । এইসব রোমিওরা যে শুধুই উঠতি বয়সের তা কিন্তু নয়। এদের মধ্যে কিছু যুবক এবং মাঝবয়েসি রোমিও-ও আছে। যুবক ও মাঝবয়েসি রোমিওরা আবার আরও গুণে গুণান্বিত। এদের অধিকাংশই মদ্যপ, বিবাহিত ও অশিক্ষিত, অথবা অল্প শিক্ষিত। এদের কর্মকান্ড দেখলে আপনার ঠান্ডা রক্ত গরম হয়ে উঠবে। হচ্ছেও তাই। এক স্কুলছাত্রীর বাবা জানালেন, আমার মেয়েকে স্কুল যাওয়ার পথে দু-একটি ছেলে বিরক্ত করে। মেয়ে বাড়িতে এসে প্রায় নালিশ জানায়। এবার আমারাও তাই সুযোগের অপেক্ষায় আছি। ‘ফয়সলা অন দ্য স্পট’ হয়ে যাবে। গণধোলাইয়ের সব ব্যবস্থা রেডি করে রেখেছি।
বেশ কয়েকটি অভিভাবকের সাথে কথা বলে জানা গেল তারা জাগছে এবং জোট বাঁধছে। প্রয়োজনে তারা আইনও নিজের হাতে তুলে নিতে পিছপা নন। বেশ কিছুদিন আগে কিছু সচেতন শহরবাসীর উদ্যোগে ‘বাইক দৌরাত্ম্য ও ইভটিজিং’ নিয়ে বেলডাঙ্গা শহর পরিক্রমা করা হয় এবং প্রশাসনের কাছে ডেপুটেশন দেওয়া হয়। কিছুদিন রোমিওদের তড়পানি বন্ধ থাকলেও, নতুন করে আবার তা শুরু হওয়ায় অভিভাবকেরা চিন্তিত। এবার তাই তারা জোট বেধেছেন আর রাস্তায় লুকিয়ে থেকে রোমিওদের দেখা পাওয়ার সুযোগের অপেক্ষায় আছেন। এরা শুধু নিজেদেরই নয়, রাস্তায় যেকোনো মেয়েকে সাহায্য করতে বদ্ধপরিকর।


vai repoter ta k?
ReplyDelete