12 May 2020

মানবিক দৃষ্টান্ত, পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি পৌঁছে দিল বেলডাঙার এক যুবক


ওয়েবডেস্ক, কথাবার্তা, বেলডাঙা, ১২ মেঃ এক মহা যুদ্ধ। অতিক্ষুদ্র আণবিক শক্তি ভাইরাসের বিরুদ্ধে সমগ্র মানব সমাজের। গোটা বিশ্ব আজ সেই যুদ্ধে শামিল। করোনারর হাত থেকে বাঁচতে দেশজুড়ে চলছে লকডাউন। কাজ হারিয়েছে অসংখ্য মানুষ। পরিযায়ী শ্রমিকরা পড়েছে মহা বিপদে। জীবনের তোয়াক্কা না করে তারা পাড়ি জমাচ্ছে নিজ নিজ বাড়িতে। কেউ হাঁটা পথে কেউ বা আবার সাইকেলে চড়ে। মাইলের পর মাইল পথ অতিক্রম করে। এমনই ১২ জন শ্রমিক বীরভূম জেলার রামপুরহাটে একটি হার্বাল কারখানা থেকে ৪ মে রাত্রি ২ টোর সময় হাঁটা পথে রওনা দেয়। তাদের মধ্যে ৮ জনের বাড়ি নদীয়া জেলার চাকদা, ২ জনের রানাঘাট ও ২ জনের কলকাতা। শ্রমিকদের দলে ছিল গৌতম মালাকার, সুরজিৎ বিশ্বাস, গোপাল বাউরী, সৌরভ বিশ্বাস, গোবিন্দ বালা, মানিক মালাকার, কিশোর সর্দার, সুকান্ত সর্দার, হিমু মজুমদার, সুবীর বৈরাগী, লুইস বিশ্বাস, মোহাম্মদ আব্বাস। কুমারপুর ফেরীঘাট পার হয়ে এদিন সকাল ১১ টা নাগাদ বেলডাঙা থানার পাওয়ার হাউস পাড়ায় এসে পৌঁছালে তারা ক্লান্ত হয়ে পড়ে। দীর্ঘ পথ হেঁটে ফুলে যায় তাদের পা। খিদের জ্বালায় তারা ঠিকমত কথা বলতে পারছে না। এই করুন অবস্থা দেখে এগিয়ে আসেন বেলডাঙার থানার মির্জাপুর পাওয়ার হাউস পাড়ার এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মোঃ মাসুদ করিম।
মাসুদ করিম  
সেখান থেকে টোটো চাপিয়ে শ্রমিকদের সে নিয়ে যায় বেলডাঙা রেলস্টেশনে। ব্যবস্থা করে তাদের খাওয়া-দাওয়ার। শুধু তাই নয় লোকাল প্রশাসন তাদের ঘরে ফেরানোর দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করলে নিজের মালবাহী ছোটো গাড়িতে করে তাদের নিজ নিজ বাড়িতে পৌছে দিয়ে আসে।একাজ করতে অবশ্য রাস্তায় অনেক পুলিশি কৈফিয়তের সম্মুখীন হতে হয়। পরিযায়ী শ্রমিক গৌতম মালাকার জানায়, "আমরা আর হাঁটতে পারছিলাম না। পায়ে ফুসকা পড়ে গিয়েছিল। মেডিকেল টেস্ট করে আমরা ৫ মে বাড়ি ঢুকেছি। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে আপাতত ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে আছি। মাসুদদা না থাকলে হয়ত ঠিক মত বাড়ি পৌঁছাতে পারতাম না।" মাসুদের এই মানবিক কাজে খুশি পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিবার। এপ্রসঙ্গে মোঃ মাসুদ করিম জানান, "বিপদের দিনে মানুষের পাশে থাকায় আমাদের কর্তব্য। আমি সেই দায়িত্ব পালন করেছি।"  

No comments:

Post a Comment