ওয়েবডেস্ক,
নিজামুদ্দিন সেখ, রেজিনগর, ১১ মে : সময়ের সঙ্গে হাত
মিলিয়ে এগিয়ে চলেছে সভ্যতা উন্নত প্রযুক্তির চরম সীমায়। এগিয়ে গেছে শহর, শহরের
প্রশিক্ষিত সমাজ। তাই বলে পিছিয়ে নেই প্রান্তিক গ্রামীণ শ্রমজীবী মানুষও। হয়ত
কাঁধে কাঁধ রেখে চলতে পারেনি তবুও ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছে তারা। এমনই আশা ব্যাঞ্জক ছবি
ধরা পড়ল মুর্শিদাবাদের রেজিনগরের প্রত্যন্ত গ্রাম দাদপুরের রাস্তায়।
মুর্শিদাবাদের অন্যতম একটি কুটির শিল্প বিড়ি।
যা হত দারিদ্র পরিবারের জীবিকার অন্যতম প্রধান অবলম্বন। এই শিল্পের প্রয়োজনীয়
যন্ত্রপাতি হল কাঁচি ছুরি। এগুলি নির্দিষ্ট সময় শান দিতে হয়। শান দেওয়ার কাজটা
করেন এক শ্রেণির ভ্রাম্যমান শানদেওয়ালা ব্যবসায়ী।যারা খুব অল্প পারিশ্রমিক নিয়ে
পাড়ায় পাড়ায়, অলিতে-গলিতে 'কাচি শানাও গো- কাচি' বলে হাক দিয়ে যায়।
এমনই এক শানদেওয়ালা
হলেন দাদপুরের আলাই মিস্ট্রি। যিনি গ্রামের পথ বেয়ে নিরন্ত্রণ হেটে চলতেন রোজগারের
আশায় বাড়ি বাড়ি। আগে কাচি শানায়ের যন্ত্র ছিল কাঠের পাঠাতনের উপর বসানো গোলাকার
ঢালায়ের চাকতি। কাঁধে করে হেটে হেটে এই যন্ত্র বহন করতে হত। প্রচন্ড ভারি ছিল। বহন
করার সময় ক্লান্তিতে চোখ বুজে আসত। তারপর কি করলেন আলাই মিস্ট্রি জানালেন নিজের
মুখে, 'কাঁধে করে মেশিন বহন ছিল কষ্টসাধ্য। মেশিন পায়ে করে চালাতে হত। বেশিদূর
যেতে পারতাম না। রোজগার হত নামমাত্র। তারপর সাইকেলের প্যাডেলের সাথে ফিট করি। ফলে
সাইকেল চালনোর সাথে শান মেশিন চালানো ও যাতায়াত উভয়ই সুবিধা হয়। একদিন প্রযুক্তিকে
কাজে লাগিয়ে কিছু মিস্ট্রিদের সহযোগিতায় মোটর বাইকের মোটর ও গিয়ার বস্কের সঙ্গে
সংযোগকারি ফিতের মাধ্যমে যুক্ত করলাম শান যন্ত্রকে। ফলে বাইকে চাবি অন করলে
শানমেশিনও চালু করা যায়। এখন বেশি গ্রাম ঘুরা যায়। রোজগারও বেশি হয়। কষ্ট আগের
তুলনায় কমে গেছে। বাড়িতে ছ-টি ছেলে-মেয়ের মুখে হাসি ফোটাতে পেরেছি।'
পেছনে ঠেলি যারে সেকি সত্যিই পেছনে টানে !
নাকি আপনার নিয়মে নিজের খেয়ালে এগিয়ে চলে প্রযুক্তি উন্নতির পথে ! আপাতত সেদিকে
তাকিয়ে ভাবী কাল।


No comments:
Post a Comment