ওয়েবডেস্ক, রেজিনগর, ২৭ এপ্রিল : 'সবুজসাথী' প্রকল্পের সাইকেল না পাওয়ায়
পরীক্ষা বয়কট করে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দিল পড়ুয়ারা। দাবি ওঠে পরীক্ষা
নয় সাইকেল চাই তাদের। সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরে রেজিনগর থানার আন্দুলবেড়িয়া হাই স্কুলে
'সবুজসাথী' প্রকল্পের সাইকেল বিলিকে কেন্দ্র করে গন্ডগোল চলছিল। আশেপাশের দু-একটা স্কুলে
সাইকেল পেলেও এই স্কুলের প্রায় ৯৫০ শিক্ষার্থী সাইকেল পায়নি। এই সাইকেল বিলিকে কেন্দ্র
করে গত ফেব্রুয়ারি মাসে রণক্ষেত্রের রুপ নিয়েছিল
রেজিনগরের কাশিপুর তারণি সুন্দরী বিদ্যাপীঠ চত্বরে। বিডিও ও পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর হয়েছিল
এবং ঘেরাও করে রাখা হয়েছিল তাদের। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশকে শূন্যে গুলিও চালাতে
হয়েছিল। সেদিন বেলডাঙা-২ ব্লকের বিডিও সহ বিভিন্ন
প্রশাসনিক কর্তারা ১০ এপ্রিলের মধ্যে সকল প্রাপ্য শিক্ষার্থীদের সাইকেল পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে বিক্ষোভ উঠে যায়। সেই সাইকেল এখন
পর্যন্ত না পাওয়ায় পরীক্ষা বয়কট করে অনির্দিষ্ট
কালের জন্য স্কুল ধর্মঘটের ডাক দেয় শিক্ষার্থীরা। দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ফিরোজ সেখ বলে,
'আমাদের গত ফেব্রুয়ারি মাসে বেলডাঙা-২ ব্লকের বিডিও দিলীপ বাগচি ও বিধায়ক রবিউল আলম
চৌধুরি কথা দিয়েছিলেন যে আমাদেরকে আগামী ১০ এপ্রিলের মধ্যে সমস্ত সাইকেল দিয়ে দেওয়া
হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমাদের সাইকেল দেওয়া হয়নি। তাই আমার পরীক্ষা বয়কট করে অনির্দিষ্ট
কালের জন্য স্কুল ধর্মঘট করছি। যতক্ষণ না বিডিও বা অন্য কোনো উচ্চ প্রশাসনিক আমাদের
সাইকেল কবে দিবে তার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে ততদিন আমাদের এই আন্দোলন চলবে।' স্থানীয় এক
অভিভাবক নরুল ইসলাম জানান, 'আমরা ছেলেমেয়েকে স্কুলে পাঠায় পড়াশোনা করতে। সেখানে সরকার
আমাদের সাইকেল দেক বা নাদেক তাতে কিছু এসে যায় না। আমরা ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার মান ভাল
চাই। কিছু দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্ররা আন্দোলন করছে। তাই আমি প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করবো
যাতে বিষয়টি তাড়াতাড়ি মিটে গিয়ে পরীক্ষা পর্ব শুরু হয় সেদিকটা দেখুন।' যদিও এই বিষয়ে
মুখ খুলতে চাইনি প্রশাসনের কোনও কর্তায়। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুর রফিক
বলেন, 'স্কুলে গত কাল থেকে শিক্ষার্থীরা সদর গেটে তালা ঝুলিয়ে রেখেছে। গতকাল প্রথম পার্বিক পরীক্ষা ৫ম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণি
পর্যন্ত শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এই আন্দোলনের ফলে পরীক্ষা বয়কট হয়েছে। আমরা সকলে
এই বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট চিন্তিত। এর কোনো সমাধান সূত্র বের করা সম্ভব হচ্ছে না। আমি
স্থানীয় বিধায়ক, বি.ডি.ও এবং উচ্চ আধিকারিক এর সঙ্গে যোগাযোগ করে ও কোনো আশার আলো পায়নি।
আন্দোলন রত পড়ুয়াদের পরীক্ষা চালানোর জন্য বার বার তাদের সঙ্গে বসে সহযোগিতা কামনা
করেও ব্যর্থ হচ্ছি।' দুই দিন ধরে চলছে ধর্মঘট।পড়ুয়াদের
দাবি উচ্চ প্রশাসনিক কোনও আধিকারিক এসে সাইকেল কবে দেবে তার প্রতিশ্রুতি দিলেই ধর্মঘট
তুলে নেবে। এই সমস্যার জট কিভাবে কাটবে সেদিকে আপাতত তাকিয়ে আছে এলাকার অভিভাবকের একাংশ।


No comments:
Post a Comment