11 February 2017

সবুজ সাথী প্রকল্পের সাইকেল বিলিকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্র মুর্শিদাবাদে রেজিনগরের থানার কাশিপুরে, পুলিশের লাঠি, পুলিশের গুলি, ভাঙচুর পুলিশ গাড়ি, আহত ২ পড়ুয়া


ওয়েবডেস্ক,  রেজিনগর, ১১ ফেব্রুয়ারি: সবুজ সাথী প্রকল্পের সাইকেল না পাওয়ায় মুর্শিদাবাদ জেলার রেজিনগর থানার কাশিপুর বিদ্যালয়ে রণক্ষেত্রের রূপ নিল। পুলিশের লাঠি চার্জ করলে পুলিশের ও বিডিও এর গাড়ি ভাঙচুর ও ইট বৃষ্টি শুরু করে পড়ুয়ারা । পরিস্থিতি সামাল দিতে শূন্যে ৫ রাউন্ড গুলি ছুড়ে পুলিশ। শনিবার দুপুরে বেলডাঙা-২ ব্লকের বিডিও দিলিপ বাগদি, রেজিনগর থানার ওসি প্রশান্ত দত্ত সহ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকাদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় কাশিপুর তারিণী সুন্দরী বিদ্যাপীঠের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা। ঘটনার সূত্রপাত, দীর্ঘদিন ধরেই রেজিনগর থানার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে সবুজ সাথী  প্রকল্পের সাইকেল না পাওয়া নিয়ে গণ্ডগোল চলছিল। এই নিয়ে গত ৩১ জানুয়ারি দাদপুর হাই স্কুলের ছাত্ররা ৩৪ নং জাতীয় সড়ক অবরোধ করে। তেঘরি নাজিরপুর ইন্সটিটিউট-এর একাদশ, দ্বাদশ ও বি এ প্রথম বর্ষের ছাত্র-ছাত্রীরা যারা এখনো সাইকেল পায়নি তারা বিদ্যালয়ের গেটে তালা দিয়ে বিক্ষোভ দেখায় গত ৯ ফেব্রুয়ারি ।  প্রশাসন খুব তাড়াতাড়ি সাইকেল দেওয়ার আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ তুলে নেয় প্রতিবার। রেজিনগর থানার ৩ টি বিদ্যালয়ে প্রায় ২৫০০ সাইকেল প্রয়োজন। শনিবার দুপুরে স্থানীয় বিধায়ক রবিউল আনম চৌধুরী ও বিডিও দিলিপ বাগদি-র নেতৃত্বে আনুষ্ঠানিকভাবে ৫২০ টি সাইকেল দেওয়ার কাজ শুরু হয় কাশিপুর তারিণী সুন্দরী বিদ্যাপীঠ প্রাঙ্গনে।  সেই সময় ওই বিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র দাবি করে আমাদের বিদ্যালয়ের ছাত্রদের আগে সাইকেল দিতে হবে। ঘটনাস্থলে পুলিশ লাঠি চার্জ করলে রণক্ষেত্রের সৃষ্টি হয়। দশম শ্রেণির ছাত্র রাজু সেখ বলে, 'আমাদের দাবি ছিল আগে আমাদের স্কুলের  সবাই সাইকেল পাবে তারপর  অন্য বিদ্যালয়ের ছাত্ররা দেওয়া হবে। এই দাবি করলে হঠাৎ পুলিশ লাঠি চার্জ করে । আমরা তখন ইট ছুড়লে পুলিশ আমাদের দেখে ৫ রাউন্ড গুলি ছুড়ে।' আন্দুলবেড়িয়া হাই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুর রফিক বলেন,  'আজ  কাশীপুর তারিণী সুন্দরী বিদ্যাপিঠ থেকে কাশীপুর  সহ আন্দুল বেড়িয়া হাই স্কুল ও তেঘরী নাজিরপুর ইনস্টিটিউটের এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মেয়েদের সাইকেল দেওয়ার কথা ছিল তাই আমি এসেছিলাম। এই সাইকেল গত  কাল শুক্রবারে দেওয়ার কথা ছিল কিন্তু বিডিও অফিস থেকে গত বৃহস্পতিবার রাত ১০ টা নাগাদ আমাদের জানানো হয় সাইকেল শনিবারে দেওয়া হবে। স্থানীয় বিধায়ক অনুষ্ঠান করে এই সাইকেল দেবে। কিন্তু ওখানে গিয়ে দেখি পর্যাপ্ত পরিমানে সাইকেল নেই। ওখানে সাইকেলের সংখ্যা ছিল ৫২০ টি। তার উপর কাশীপুর সহ আন্দুলবেড়িয়া ও নাজিরপুর হাই স্কুলের বর্তমানের একাদশ, দ্বাদশ ও যারা বি এ প্রথম বর্ষের ছাত্র ও ছাত্রীরা এখনো সাইকেল পায়নি  যার সংখ্যা ২৫০০ টি এর উপর। তার মধ্যে কাশীপুরের ছেলেরা দাবি করে আগে কাশীপুরের সমস্ত ছেলে মেয়েরা সাইকেল আগে পাবে। তারপর অন্যরা। বিডিও , বিধায়ক ও ওসি আলোচনা করে ঠিক করেন আজ যাদের সাইকেল দেওয়ার কথা তাদের সাইকেল দেওয়ার পর বাকিদের সাইকেল আগামী এপ্রিল মাসে দেওয়া হবে। তাতে কোনো কাজ হয়নি হঠাৎ করে দীর্ঘদিনের জমে থাকা পড়ুয়াদের ক্ষোভ গিয়ে পরে প্রশাসনের ওপর। ঘটনাস্থলে পুলিশ মৃদু লাঠি চাজ করলে উত্তেজিত জনতা ইট বৃষ্টি শুরু করে এবং পুলিশ ও বিডিও-র গাড়ি ভাঙচুর করে।'


No comments:

Post a Comment