ওয়েবডেস্ক, বেলডাঙা,
২১ ফেব্রুয়ারি : বাল্যবিবাহ রোধে ও পণপ্রথার বিরুদ্ধে
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সচেতন করতে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করে
প্রচার করল দেবকুন্ড সেখ আব্দুর রাজ্জাক মেমোরিয়াল গার্লস হাই মাদ্রাসা। মঙ্গলবার
বেলডাঙা থানার দেবকুন্ড এলাকার দেবকুন্ড সেখ আব্দুর রাজ্জাক মেমোরিয়াল গার্লস হাই
মাদ্রাসার উদ্যোগে বাৎসরিক সাংস্কৃতিক ও ভাষা দিবস উপলক্ষ্যে ছাত্রী ও অভিভাবকদের
নিয়ে এই শিবিরের আয়োজন করে। উপস্থিত ছিলেন বেলডাঙা থানার ওসি মৃণাল সিনহা সহ
বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ও এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। এই শিবিরে গুণী ব্যক্তিরা তাদের
আলোচনা ও ছাত্রীরা তাদের নাটকের মাধ্যমে তুলে ধরে বাল্যবিবাহ ও পণপ্রথার কুফল। এই
গ্রামে প্রায় ১৬ হাজার লোকের বসবাস। গ্রামের বিশিষ্ট ব্যক্তি, প্রশাসন ও কিছু
স্বেচ্ছাসেবি সংস্থাকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে ও ছাত্রীদের ছোটো ছোটো টিম করে
এলাকায় এলাকায় বাল্যবিবাহ ও পণপ্রথার বিরুদ্ধে সচেতন করে যাচ্ছে এই বিদ্যালয়।
প্রধান শিক্ষিকা মুর্শিদা খাতুন বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয় ২০১০ সালে ২০২ জন ছাত্রী
নিয়ে চালু হয়। বর্তমানে আমাদের ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ১১০০ জন। কিন্তু আমরা প্রতি
বছর লক্ষ্য করছি আমাদের মেয়ের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। তার প্রধান কারন বাল্যবিবাহ। এই
বাল্যবিবাহ রোধ করতে তখন আমরা কতগুলি পন্থা নিই। আমাদের ছাত্রীদের নিয়ে ছোটো ছোটো
টিম তৈরি করি। তাদের নিয়ে আমরা বিভিন্ন পাড়ায় পাড়ায় প্রচার চালায়। এই প্রচার বন্ধ
করার জন্য অভিভাবকরা তাদের ওপর বিভিন্ন চাপ সৃষ্টি করে। তখন আমরা এলাকার বিশিষ্ট
ব্যক্তি, প্রশাসন ও কিছু স্বেচ্ছাসেবি সংস্থা সাহায্য নিই। এখন আমরা প্রতি বছর গড়ে
২২ জনের বাল্যবিবাহ রোধ করে স্কুল মুখি করতে পেরেছি।' গ্রামবাসী সামসুর রহমান
বলেন, ‘আমার মেয়ে এই স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী। আমি আগে বাল্যবিবাহ কুফল
সম্পর্কে বেশি কিছু জানতাম না। মেয়ের মুখ থেকে সব কুফলগুলি শুনে আমি অঙ্গীকার
করেছি ১৮ বছরের আগে আমার মেয়ের বিয়ে দেব না।' দশম শ্রেণির ছাত্রী নাসরিন খাতুন
বলে, ‘আমি যখন নবন শ্রেণিতে পড়তাম তখন বাড়ি থেকে আমার বিয়ে জোর করে দেবার চেষ্টা
করেছিল। আমি স্কুলের সহযোগিতা নিলে বিয়ে বন্ধ হয়ে যায়। আমি এখন আরও পড়তে চাই।' এই
অনুষ্ঠানে বেলডাঙা থানার ওসি মৃণাল সিনহা শিবিরে বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে
ছাত্রী ও অভিভাবকদের বোঝান এবং প্রশাসনের দিক থেকে সমস্ত সাহায্য করার আশ্বাস দেন।


No comments:
Post a Comment