06 August 2016

সম্পাদকীয় ৮





পিছিয়ে এসে স্ট্যান্ট নেওয়া খেলারই  একটি বিশেষ পদ্ধতি । ক্রিকেট খেলায় এই পদ্ধতির প্রয়োগ হামেশাই দেখা যায় । যুদ্ধেও এই পদ্ধতির উপযোগিতা অনেক সেনানায়কই স্বীকার করেন । তবে এর সর্বশেষ সংস্করণ বোধহয় শাহরুখ খানের 'বাজিগর' । যেখানে তিনি বলেছেন, কখনও কখনও বড় বাজি জেতার জন্য ছোটখাটো বাজি হারতে হয় ( পড়ুন ছেড়ে দিতে হয় )। বিচক্ষণ খেলোয়াড় জানেন কোন খেলা কীভাবে জিততে হয় । সেটা তার চালাকিও হতে পারে । আফটার অল যুদ্ধটা তাকেই জিততে হবে । কেউ তার ওই কাজটি করে দেবে না । 

বাঘ তার শিকারের জন্য অন্ধকারে অথবা ঝোপের আড়ালেই অপেক্ষা করে । সুযোগ বুঝে ঝাঁপিয়ে পড়ে শিকারের ঘাড়ে । ফাঁকা রাস্তায় দাঁড়িয়ে কখনোই হাম্বিতাম্বি করে না । কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাড়িয়ে শিকার করে বটে, তবে সেখানে থাকে তার রাজকীয়তা, আভিজাত্য । প্রসঙ্গত জানাই, বেশিরভাগ আভিজাত্য সহজাতই হয় । বাঘের আভিজাত্য তার ডিএনএ-তেই থাকে ( রক্তে নয় কিন্তু ) । তেমনি খরগোশের আভিজাত্য থাকতে পারে । থাকতে পারে ইঁদুরের আভিজাত্যও । একেক জনের আভিজাত্যের ধরন আলাদা হতে বাধ্য । অনেকে আবার অর্জিত আভিজাত্য নিয়ে বগল বাজান । সে বাজাতেই পারেন । কিন্তু খরগোশ কখনো বাঘ হয় না । যেমন হয় না ইঁদুর কখনো খরগোশ । 

বড়োদের সম্মান করা ( তাঁদের সামনে স্পর্ধা না দেখানো বা হেয় না করাও ) ভারতীয় কেন গোটা পৃথিবীরই সংস্কৃতির অঙ্গ। কারও তার থেকে উঁচু (যে কাজে তিনি দক্ষ) কারও সামনে 'কোনো কাজ'-এর হাম্বিতাম্বি মানায় না । উঁচু-র সমকক্ষ মনে করার স্পর্ধাও হাস্যকর । যা তাকে 'এক্কেবারেই মানায় না' । ররবীন্দ্রনাথ বলেছেন জ্ঞানের সাগরের তীরে নুড়ি পাথর নিয়ে খেলা করার কথা । হুমায়ুন আহমেদও বলতেন, তিনি লেখালেখির চেষ্টা করেন মাত্র । এতে কেউ যদি হুমায়ুন আহমেদের প্রতিভা নিয়ে সন্দেহ করেন তার মতো বোকা ইহজগতে কেউ নেই । এরপরেও বলা যায়, কেউ-ই কোনো কাজে স্বয়ংসম্পূর্ণ নয় । সবকাজেই তার কোনো না কোনো উপরিওয়ালা বাবা থাকবেই । সে তিনি লেখালেখি করুন, কিংবা রিক্সা চালান । পারফেক্ট-ম্যান বা সম্পূর্ণ-মানুষ কোনো মহাপুরুষই ছিলেন না । কবিলেখকরা কোন ছার । কেউ যদি বলেন 'লিখতে জানি', সে তিনি বলতেই পারেন । কিন্তু সে লেখারও বাপ-ঠাকুরদা থাকে । সে তিনি মানেন বা না মানেন ।

No comments:

Post a Comment