18 September 2018

মুখ্যমন্ত্রীর কাছে 'ফরিদপুর-রেজিনগর ডেভেলপমেন্ট অথরিটি' গঠনের অার্জি



ওয়েবডেস্ক, কথাবার্তা, রেজিনগর, ১৮ সেপ্টেম্বর : প্রায় ছয়শত বৎসরের প্রাচীন ফরিদ শাহর মাজার। এলাকার হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতির এক অনন্য নিদর্শন।
    ইংরেজি ১২০৬ মতান্তরে ১২০৭ সালে ইখতিয়ার উদ্দীন মোহাম্মদ বিন বখতিয়ার খলজির নেতৃত্বে বাংলায় তুূর্কী আক্রমন ঘটে। প্রচলিত হয় বাংলায় তুর্কী শাসন।সুলতানি যুগ। এই সময়ের পরবর্তীতে বাংলায় আগমন ঘটে সুফি সাধকদের।তাঁদের মাধ্যমে ইসলামের ঔদার্যের প্রচার ও প্রসার ঘটে। মুর্শিদাবাদ জেলার এই জনপদটিতে একজন চিস্তিয়া মতের সুফি সাধকের আশ্রম গড়ে ওঠে। যিনি ফরিদ শাহ নামে পরিচিত ছিলেন। তার এন্তেকালের পর এখানে গড়ে ওঠে ফরিদ শাহর মাজার। মূল মাজারটি এক গম্বুজ বিশিষ্ট। কথিত আছে, মাজারের আদি গর্ভগৃহটি একরাত্রিতে তৈরি হয়েছিল! সুলতানি যুগের নিদর্শন মাজারটির বর্তমান অংশটি মূল স্থাপত্য ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর সংস্কারকৃত অবস্থা।

     অন্যদিকে, পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজদ্দৌলার পরাজয় ঘটলেও বীরবিক্রমে যে নবাব সেনাপতি ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াই করে যুদ্ধে জয় প্রায় করায়ত্ত করে আনছিলেন, তিনি নবাবের বিশ্বস্ত সেনাপতি 'মীরমদন'। ১৭৫৭ সালের ২৩শে জুন তিনি অতর্কিত ইংরেজ কামানের এক গোলার আঘাতে যুদ্ধে শহিদ হলেন। তাঁর প্রশিক্ষিত ঘোড়া তাঁকে ফরিদ শাহর মাজারে নিয়ে আসে। সেখানেই স্থানীয় মানুষ তাঁর মরদেহ সমাধিস্থ করেন। ফরিদ শাহর মাজারের পশ্চিম পাশে রয়েছে পলাশীর যুদ্ধে শহিদ সেনাপতি 'মীরমদনের সমাধি'। ভারতের পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগ কর্তৃক সমাধিটি অধিগৃহীত হয়েছে।

   মাজারে পুণ্যার্জনে আসা ভক্তগণ ফরিদ শাহর কবরের পাশাপাশি শহিদ মীরমদনের সমাধিতেও ধূপ-পুষ্প দিয়ে তাঁদের অন্তরের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। উল্লেখ্য, কয়েক বৎসর পূর্বে পশ্চিমবঙ্গের ভূতপূর্ব রাজ্যপাল মহামহিম গোপালকৃষ্ণ গান্ধী মহাশয় ফরিদ শাহর মাজার ও মীরমদনের সমাধিক্ষেত্র পরিদর্শন করে গিয়েছেন।
    এহেন ঐতিহাসিক ও পুরাতাত্ত্বিক স্থানটি নিদারুন অবহেলা ও জেলা প্রশাসনের উদাসীনতার শিকার।


    অথচ, মাজারের সুবিশাল জায়গা ও জলাশয়ের পাড়ের সবুজায়ন-সৌন্দর্যায়ন ও মানোন্নয়ন ঘটিয়ে রাজ্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ পর্যটন ক্ষেত্র হিসেবে গড়ে তোলা যায়। প্রচুর কর্মসংস্থানের মাধ্যমে এলাকার উন্নয়ন করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।
     এলাকার বিশিষ্ট  শিক্ষক, গবেষক ও সমাজকর্মী সাবির চাঁদ জানালেন, 'অামরা মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মহোদয়ার দৃষ্টি অাকর্ষণ করে বলতে চাই, পাথরচাপুড়ি ডেভেলপমেন্ট অথরিটির ন্যায় 'ফরিদপুর-রেজিনগর ডেভেলপমেন্ট অথরিটি' গঠনের মাধ্যমে ফরিদ শাহর মাজার ও মীরমদনের সমাধিক্ষেত্রকে রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে উল্লেখযোগ্য স্থান দেওয়া হোক।'


No comments:

Post a Comment