14 June 2018

দারিদ্র ও প্রতিবন্ধকতাকে পিছনে রেখে উচ্চ মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ দুই লড়াকু পরীক্ষার্থী


ওয়েবডেস্ক, কথাবার্তা, বেলডাঙা, ১৪ জুন : দারিদ্র ও প্রতিবন্ধকতাকে হার মানিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় সাফল্য অর্জন করে নজির গড়ল দুই বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পরীক্ষার্থী। তাদের সাফল্যে খুশি বিদ্যালয় ও এলাকাবাসী। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় সাফল্য অর্জন করলেও উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে দারিদ্রতা এখন প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের কাছে। জহিদুল সেখ ও মুস্তাফিজুর রহমান এবারে বেলডাঙা ঝুনকা হাই মাদ্রাসা থেকে উচ্চ মাধ্যমিক দেয়। তাদের শরীরের উচ্চতা এতই ছোট যে ঠিক মতো হাটাচলা এমনকি উঠতে-বসতে পারে না। অন্যের সাহায্য নিয়ে তাদেরকে চলাফেরা করতে হয়। তাদের এই শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সহপাঠীদের কাছে বিদ্রুপের কারণও হয়ে উঠে। এই প্রতিবন্ধকতাকে সামনে রেখে অদম্য মানসিক জোরে তারা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয় এবং সাফল্যের সঙ্গে পাশও করেছে। 
জহিদুল সেখের প্রাপ্ত নম্বর ২৩৭। তার মায়ের নাম আলিয়া বিবি, বাবা একজন দিনমুজুর কিন্তু বার্ধক্যের কারণে সে এখন খাটতে পারে না। সংসারে অভাব তাদের এখন নিত্যদিনের সঙ্গী। জন্ম থেকেই জহিদুল পোলিও ও জটিল অস্টিও সমস্যায় আক্রান্ত। 
মুস্তাফিজুর রহমানের প্রাপ্ত নম্বর ২৬৫। তার মায়ের নাম গুলনাজ বিবি, বাবা একজন কৃষি শ্রমিক। জমিজমা কিছুই নেই। বেশ কয়েক মাস থেকে তার বাবা আবার অসুস্থ। জন্ম থেকেই মুস্তাফিজুরের শরীরের বৃদ্ধি ঠিক মতো না হওয়ায় উচ্চতা প্রায় আড়াই ফুট। একারণে সে ঠিক মতো হাত-পা সঞ্চালনও করতে পারে না। 


এই দুই বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পরীক্ষার্থীর সাফল্যে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ অবদান তাদের মায়েদের। নিরক্ষর হলেও দুই মায়ের আন্তরিক প্রচেষ্টা দারিদ্রকতাকে পাশ কাটিয়ে শারীরিক  প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও পরীক্ষায় তাদের এই জয় করা সম্ভব হয়েছে। এতসত্ত্বেও এই  দুজন ছাত্রের পরিবারের কোন আর্থিক সঙ্গতি নেই তাদের কলেজে ভর্তি করার ও যাতায়াতের খরচ বহন করা মতো। ব্লক অফিসে আবেদন করার পরও  তারা কোনও প্রতিবন্ধী ভাতা পায়নি বলে জানান পরিবারের লোকজন। তবুও আশায় বুক বেঁধে সন্তানের এই দুই মা চেয়ে রয়েছে যদি কিছু আর্থিক সাহায্য পাই তাদের ছেলেদের পড়াশুনা জন্য।

1 comment: