02 August 2019

ভুয়ো শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগে ধন্ধুমার বেলডাঙা


ওয়েবডেস্ক, কথাবার্তা, দাবিরুল, বেলডাঙা, ২ আগস্টঃ ভুয়ো শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগে ধন্ধুমার বেলডাঙা। পড়ুয়ারা বিক্ষোভ দেখাল স্কুলে। ভাঙচুর করে ম্যানেজিং কমিটি সম্পাদকের বাড়ি। পরিস্থিতি সামলাতে ঘটনাস্থলে আসে বিশাল পুলিশবাহিনী।
রাজ্যের আট মাদ্রাসার সঙ্গে ভুয়ো শিক্ষক নিয়োগের নাম জড়াল মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা থানার দেবকুন্ড হাই মাদ্রাসা (উঃমাঃ)। চলতি বছরে গত ১৮ জুলাই ডিরেক্টরি অব মাদ্রাসা এডুকেশন পক্ষ থেকে হাই মাদ্রাসায় একটি ইমেল আসে। ইমেলের বয়ান অনুসারে, কমিটির পক্ষ থেকে ২০১৬ সালে নিয়োগপ্রাপ্ত  ৫ জন  শিক্ষক ও ৪ জন অশিক্ষক কর্মচারী অর্থাৎ মোট নয়জন কে বেতনভু্ক্ত করার জন্য তাদের নথিপত্র চাওয়া হয়। সেই ইমেল পেয়ে চমকে ওঠে সকলে।  কাওকেই চিনতে পারেনা হাই মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। এমনকি ম্যানেজিং কমিটির অনেকেই জানেনা এই ঘটনা। রেজুলেশন খাতার কোথাও উল্লেখ নেই এই নিয়োগের ব্যাপারে। সম্পূর্ন বিষয়টি গোপনে কমিটির কিছু সদস্যদের নিয়ে কমিটির সম্পাদক নজির হোসেন করেন বলে জানতে পারে কর্তৃপক্ষ। 

ঘটনাটি গ্রামবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে পরতেই শুরু হয় জোর বিতর্ক।  হাই মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানান জেলা ডি. আই অফিসে। পরে বিষয়টি নিয়ে প্রধান শিক্ষক সমাজের দারস্ত হন। তাঁর ডাকে সাড়া দেয় সমাজ। শুক্রবার দুপুর ২ টা নাগাদ প্রায় শ'খানেক সমাজের বিশিষ্টজনদের নিয়ে শুরু হয় আলোচনা। সেখানেই  হাই মাদ্রাসার পড়ুয়ারা শুরু করে বিক্ষোভ। সম্পাদক নজির হোসেনের বাড়ি গেয়ে শুরু করে ভাঙচুর। পরিস্থিতি সামলাতে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশবাহিনী। শুরু হয় ধ্বস্তাধস্তি। পরে বেলডাঙা থানার ওসি আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। 

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে কলকাতা হাই কোর্ট মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন অবৈধ বলে ঘোষণা করে। নিয়োগ ক্ষমতা পায় ম্যানেজিং কমিটি।  কিন্তু হাই কোর্টের সেই রায়ের ওপর ২০১৬ সালের ১৪ মার্চ স্থগিতাদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। এবং ২০১৫ সালের হাইকোর্টের রায়ের পর থেকে স্থগিতাদেশের মধ্যবর্তী সময়ে যে সকল শিক্ষক নিয়োগ হয়েছিল তাদের বেতন চালু করার নির্দেশ দেয় সর্বোচ্চ আদালত। সেই মতো শিক্ষকদের নথিপত্র যাচাই করে নিয়োগ দিতে থাকে সরকার। এই সুযোগটাকে কাজে লাগাতে এবার অসাধু পথ বেছে নেয় কিছু হাই মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটি। ব্যাক-ডেটে অর্থাৎ ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসের হাইকোর্টের রায়ের পর থেকে ২০১৬ সালের ১৪ মার্চের উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশের মধ্যবর্তী সময়ে নিয়োগপত্র ইস্যু করে বেতন চেয়ে সরকারের কাছে আবেদন করতে শুরু করে কমিটি কর্তৃক নিযুক্ত শিক্ষকেরা। কিন্তু বিষয়টি সামনে আসতেই তাদের ভুয়ো শিক্ষক বলে দাবি করেন অনেকে। নিযুক্ত শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মচারীদের মধ্যে অনেকেই ম্যানেজিং কমেটির পরিবারের সদস্য বলে জানা যায়।



No comments:

Post a Comment