18 April 2017

পেঁয়াজের ফলন ভালো, তবু চাষির মুখে নেই হাসি


ওয়েবডেস্ক, নওদা, ১৮ এপ্রিল : ফসলই চাষির ঘরের লক্ষ্মী। ফসল  ঘরে ওঠে আসলে চাষির মুখে ফুটে হাসি। সংসারের অভাব অনটনের আপাতত অবসান হয় তা বেঁচে। প্রতি বছরে মতো এবছরও পেঁয়াজ উঠতে শুরু হয়েছে মুর্শিদাবাদের নওদা ব্লকের চাষিদের। এবারে জমিতে পেঁয়াজের ফলন ছিল ভালো। কিছুটা লাভের মুখ দেখতে পাবে ভেবেছিল চাষিরা। কিন্তু বেঁচতে গিয়ে তারা হতাশ হচ্ছে। বাজারে চাহিদার চেয়ে যোগান বেশি। তাই দাম ঠিক মতো না থাকায় দুশ্চিন্তায় পড়েছে। জমি চাষে কয়েক মাসের পরিশ্রমের হিসাব বাদ দিলেও খরচ উঠবে কিনা- ভেবে দিশেহারা তারা। অনেকে আবার বিঘা প্রতি দশ হাজার টাকা দিয়ে জমি কন্টাক্ট নিয়ে পেঁয়াজ চাষ করেছে। ত্রিমোহিনী গ্রামের পেঁয়াজ চাষি ফারুক বিশ্বাস বলেন, ‘গত বছর ভালোই দাম ছিল। তাই এ বছর ৫ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছি। সব জমিই কন্টাক্ট করে নেওয়া। কন্টাক্ট বাবদ প্রতি বিঘাতে জমির মালিককে ১০ হাজার টাকা দিতে হবে। পেঁয়াজ চাষ করতে বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে ১৫ হাজার টাকা করে। কিন্তু বিঘা প্রতি পেঁয়াজ বেঁচে আসছে ১৫ হাজার টাকা। পেঁয়াজ বেঁচে টাকা জমির মালিককে দেবো না চাষের খরচ মেটাবো ভেবে পাচ্ছি না। মাথার উপর এবার একগুচ্ছ টাকা ঋণ হয়ে গেল। ছেলেপুলে নিয়ে সারা বছর কীভাবে বেঁচে থাকব ভাবছি। নওদা ব্লকে বেশি ভাগ জমিতে সুখসাগর পেঁয়াজ চাষ হলেও নেই কোন পেঁয়াজ সংরক্ষনের ব্যবস্থা। আরেক চাষি জাহাঙ্গীর আলি বলেন, ‘কাটা পেঁয়াজ বেশি দিন ঘরে রাখা যায় না। রাখলে পচে নষ্ট হয়ে যায়। আবার সারের দোকানে দেনা আছে। দোকানদার রোজ তাগদা দিচ্ছি। জমি থেকে তুলে আনতেও খরচ হচ্ছে। সেই কারণে বাজার দর না থাকলেও অল্প দামে বেঁচতে বাধ্য হচ্ছি। যদি সংরক্ষনের জন্য হিমঘর থাকত তাহলে কিছু রেখে পরে তা বেঁচলে কিছুটা লাভের মুখ দেখতে পেতাম।' 

No comments:

Post a Comment